দেশে রেমিট্যান্সের ১২ শতাংশ পাঠান যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা

পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য লড়ে যাওয়া মানুষটাকেই বলা হয় প্রবাসী। আবার কেউ কেউ উন্নত জীবনের আশায় পাড়ি জমান ইউরোপ, আমেরিকা কিংবা যুক্তরাজ্য। প্রত্যাশা, ভালো থাকুক আগামী প্রজন্ম, দেশে থাকা পরিবারের সদস্যরা।

পুরো মাস কাজ শেষে তাদের প্রথম লক্ষ্য থাকে দেশে একটি নির্ধারিত পরিমাণ টাকা পাঠানো। আর কষ্টার্জিত সে টাকা কেউ দেশে পাঠান বৈধ পথে আবার কেউ বেছে নেন অবৈধ হুন্ডির পথ।

তবে সরকারি প্রণোদনা ও সচেতনতামূলক প্রচারের ফলে দিন দিন বৈধ পথে দেশে টাকা পাঠানোর পরিমাণ বাড়ছে।

বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে পাঠানো মোট রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের একটি বড় অংশই যাচ্ছে যুক্তরাজ্য থেকে।

যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের তথ্যমতে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে বৈদেশিক রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৭ শত ৪.২৪ মিলিয়ন ইউএস ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ১ হাজার ৮ শত ৭৭.৭৬ বিলিয়ন টাকা। যার সাড়ে ১২ শতাংশই এসেছে যুক্তরাজ্য থেকে।

চলতি ২০২৪ সালে প্রবাসী আয়ের এই গতি অব্যাহত থাকলে এটি আরও বৃদ্ধি করে ১৫ শতাংশ কিংবা তারও বেশি করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ হাইকমিশন।

বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে আরও জানা যায়, এর আগে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে দেশে আসা ২১ হাজার ৬১ মিলিয়ন ইউএস ডলারের মধ্যে যুক্তরাজ্য থেকে আসে ৯ শতাংশ। অর্থাৎ দ্রুত বাড়ছে যুক্তরাজ্য থেকে পাঠানো রেমিট্যান্সের হার।

আগামীতে যাতে বৈধ পথে টাকা পাঠাতে মানুষকে আরও উদ্বুদ্ধ করা যায় সে লক্ষ্যে কাজ করছে হাইকমিশন।

এ লক্ষ্যে সম্প্রতি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে পূর্ব লন্ডনের ব্রাডি আর্ট সেন্টারে একটি রেমিট্যান্স ফেয়ার আয়োজন করে বাংলাদেশ হাইকমিশন। রেমিট্যান্স ফেয়ারে অংশ নেয় বাংলাদেশি ১৪ টি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠান প্রবাসীদের মাঝে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা তুলে ধরে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, ‘মূলত আমরা চাই সকল প্রবাসী যেন বৈধ পথে দেশে টাকা পাঠান। এতে যিনি টাকা পাঠাচ্ছেন তিনি যেমন উপকৃত হবেন দেশও উপকৃত হবে।‘

সাইদা মুনা বলেন, ‘বৈধ পথে টাকা পাঠালে একজন প্রবাসী সরকার থেকে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা পান। এমনকি তার বিপদের সময় তিনি চাইলে সরকার থেকে সহযোগিতাও পাবেন। তাই আমরা এসব মেলার মাধ্যমে মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি করতে চাই।‘

তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে বিশেষ করে যুক্তরাজ্য থেকে বৈধ পথে টাকা পাঠানোর পরিমাণ বৃদ্ধি হয়েছে। আগামীতে আশা করছি আরও বৃদ্ধি পাবে।‘

অপরদিকে রেমিট্যান্স ফেয়ারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনেক প্রবাসী জটিলতা মনে করে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে অবৈধ পথ বেছে নেন। কিন্তু আমরা তাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, বর্তমান সরকার প্রবাসী বান্ধব। বৈধ পথে টাকা দেশে পাঠাতে কোন জটিলতা নেই। যে কেউ যে কোন মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সহজেই টাকা পাঠাতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে তার কষ্টার্জিত টাকাও নিরাপদ থাকবে।‘